নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ নগরীর আমলাপাড়ায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলে এই রোজার মধ্যেও চলছে ক্লাস। ফলে সেহরী খেয়ে ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমাতে না ঘুমাতেই আবার অভিভাবকদের উঠতে হচ্ছে বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যাওয়ার জন্য। যেসব বাচ্চা শিশু বয়স থেকে রোজার অভ্যাস করে তাদের অভ্যাস হচ্ছে বিঘ্নিত। রোজার শুরুতে আটদিন এ স্কুলটি খোলা ছিলো। তখন পরীক্ষা হয়েছে। আবার রোজার শেষে এসে তারা স্কুল খুলেছে।
নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, রোজার শুরুতে স্কুল বন্ধ হয়ে গেলেও গত ১৭ জুন ২১ রোজার দিন স্কুল আবার খুলেছে। চলবে এ সপ্তাহের ২২ জুন পর্যন্ত। ক্লাস শুরু হচ্ছে সকাল আটটা থেকে। ফলে রোজাদার অভিভাবকদের সকালে স্কুলে ছুটতে হচ্ছে বাচ্চাদের নিয়ে।
নগরীর মাসদাইর এলাকার বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী অভিভাবক জানান, এখন তিনটা চল্লিশ এর দিকে সেহরির শেষ সময় থাকে। এরপর ফজরের নামাজ পড়ে শুতে শুতে সাড়ে চারটা। সকাল আটটায় বাচ্চাকে স্কুলে দিতে হলে তার জন্য নাস্তা তৈরী করতে দেরী করে উঠলেও সকাল সাতটায় অবশ্যই উঠতে হয়। সাড়ে চারটায় ঘুমিয়ে সকাল সাতটায় আবার উঠা কতটা কষ্টের তা যারা ওঠে তারাই শুধু বোঝে। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আর পরিচালনা কমিটির লোকজন বোধহয় রোজা রাখেনা।তাই এই বাস্তবতা তারা বুঝতে পারেনা।
তল্লা এলাকার আরেক অভিভাবক জানান, অনেক বাচ্চাই রোজা রাখে। শিশু বয়সে তাদের রোজা রাখার অভ্যাস তৈরী হয়। কিন্তু রোজার সময় স্কুল খোলা থাকলে তাদের কি পরিমান কষ্ট হয়ে যায় তা কি স্কুল কতৃপক্ষ বোঝে ? বাধ্য হয়ে এসব বাচ্চাদের রোজা ভাঙ্গতে হয়। অথবা কষ্ট করে রোজা রাখতে হয়।
রোজার দিন হওয়ায় সকালে রিকশা পাওয়া যায়না। তাই স্কুলে আসতেও বেশ অসুবিধা হয়। তিনি বলেন, এ বছর ইংরেজী মাস আর রোজার মাস প্রায় একই সময়ে শুরু হয়েছে। তাই শুধু বেতন আদায়ের জন্য স্কুল কমিটি রোজার মধ্যে স্কুল খুলে বাচ্চাদের, অভিভাবকদের কষ্ট দিচ্ছে। দেশের আর কোথাও স্কুল খোলা নেই। ব্যাতিক্রম শুধু এই স্কুল।
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, স্কুলের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এখন সে পরীক্ষার খাতাগুলি শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের দেখাবো। এরপর আবার খাতাগুলি জমা নিয়ে স্কুল বন্ধ করা হবে। এ খাতা দেখানোর জন্যই স্কুল খোলা হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কিছু নিজস্ব নিয়ম কানুন থাকে। এসব অভিভাবকরা না বুঝলে প্রতিষ্ঠান চলবে কিভাবে ? এছাড়া এ ব্যাপারে কোনো অভিভাবক আমাদের কাছে কোনো আপত্তি করেনি।