অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষা দেয়ার নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক : ডাক্তারি পরীক্ষায় বসতে গিয়ে হয়রানির শিকার ছাত্রীরা। অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষায় বসতে নির্দেশ দিলেন নিরাপত্তাকর্মী। জিনসের বোতাম খুলে হলে ঢোকার নির্দেশ দেয়া হয় আর এক ছাত্রীকে। স্নাতক স্তরের ডাক্তারি কোর্সে ভারতের সরকারি এবং বেসরকারি কলেজে ভর্তির জন্য রোববার দেশের ১০৪ শহরে পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ লাখ।

পরীক্ষায় বসতে গিয়ে কেরলের কন্নুরে হয়রানির শিকার হলেন আঠারো বছরের এক ছাত্রী। হলে ঢোকার আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে সকল পরীক্ষার্থীর তল্লাশি নিচ্ছিলেন এক নিরাপত্তারক্ষী। ওই ছাত্রীর অন্তর্বাসে ধাতব হুক লাগানো ছিল। মেটার ডিটেক্টরে তা ধরা পড়লে অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষায় বসতে নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশ মানতে অস্বীকার করলে তাকে হলে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। বাধ্য হয়ে অন্তর্বাস খুলে রেখে পরীক্ষা দিতে বসেন ছাত্রী। ঘটনার সময় পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন ছাত্রীর মা।

তিনি জানিয়েছেন, ‌পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতরে ঢোকার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেরিয়ে আসে মেয়ে। অন্তর্বাস খুলে আমার কাছে রেখে যায়। গাঢ় রঙের জামা পরে পরীক্ষা দেয়া যাবে না বলেও জানানো হয়েছিল। প্রায় আড়াই কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে কোনো রকমে একটা হাল্কা রঙের জামা কিনে আনি। তারপরই পরীক্ষায় বসতে পারে মেয়ে।

ডাক বিভাগের কর্মী রাজেশ নমবিয়ারও একই অভিযোগ করেছেন। তার দাবি, ‌জিনস পরে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল মেয়ে। প্যান্টে ধাতব বোতাম লাগানো ছিল। পকেটের ওপরও একটা বোতাম লাগানো ছিল। যে কারণে তাকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। বোতাম খুলে রেখে এবং ব্লেড দিয়ে পকেটের ওপর বোতাম লাগানো অংশটুকু কেটে হলে ঢুকতে বলা হয় ওকে। ব্লেড দিয়ে বোতাম কেটে মেয়েকে পরীক্ষার হলে ঢুকিয়ে নিজে বেরিয়ে পড়ি। পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে একটি জামা–কাপড়ের দোকান দেখি। কিন্তু তখন বন্ধ ছিল সেটি। খোঁজ খবর নিয়ে ওই দোকানের মালিককে ডেকে এনে দোকান খোলাই। সেখান থেকে জামা কিনে মেয়ের কাছে পৌঁছে দিই।‌

ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষার্থী এমন ঘটনার সম্মুখীন হন। ফুলহাতা জামা এবং হিল জুতা নিয়েও আপত্তি করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। অনেকে জামার হাতা কেটে পরীক্ষায় বসেন। দূর থেকে পরীক্ষা দিতে এসে এমন কাণ্ড দেখে বিপদে পড়েন বেশ কিছু পরীক্ষার্থী। পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে যাদের বাড়ি ছিল তারা সাহায্যে এগিয়ে আসেন। নিয়ম, কানুনের নামে শিক্ষার্থীদের এভাবে হয়রানি করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্য মহিলা কংগ্রেসের সভাপতি বিন্দু কৃষ্ণা। তার মতে, ‌নিয়ম, কানুনের দোহাই দিয়ে এমন হয়রানির তীব্র নিন্দা করছি।
পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে এভাবে হয়রানি হয়ে আদৌ ঠিক করে পরীক্ষা দিতে পেরেছিলেন কী ছাত্রীরা? এতকিছুর পর নিশ্চিন্তে সব প্রশ্নের উত্তর লেখা যায় কী?‌ মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে চিঠি লিখে জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানাবেন।