অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ জরুরি

রাজধানীতে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করলে এদের দৌরাত্ম্য কমে যায়। আবার শিথিল করলে দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। মূলত ঈদ মৌসুমগুলোতে এদের দৌরাত্ম্য বাড়ে। কিন্তু এবার স্বাভাবিক সময়েও তাদের তৎপরতা বৃদ্ধির খবর নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।

রাজধানীর বাস, ট্রাক ও রেলস্টেশনসহ ব্যস্ত এলাকাগুলোয় মূলত অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা সবচেয়ে বেশি। হকার কিংবা সাধারণ যাত্রীর ছদ্মবেশে এরা খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে অথবা নাকের সামনে গ্যাস স্প্রে করে নিরীহ মানুষকে সর্বস্বান্ত করে ছাড়ে। মাত্রাতিরিক্ত চেতনানাশক দেওয়ায় অনেকে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হন। আবার অনেক ক্ষেত্রে অচেতন ব্যক্তির মৃত্যুর নজিরও রয়েছে।

একসময় অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা মূলত ঈদকেন্দ্রিক ছিল। ঈদে ঘরমুখো মানুষ ও গরুর ব্যাপারীরা ছিল এদের টার্গেট। তবে সম্প্রতি এদের দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়েছে যে, সারা বছরই সাধারণ যাত্রীদের এদের শিকার হতে হচ্ছে। একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এ বছর অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ঢাকার তিনটি হাসপাতালে ২৪৭ জন মানুষ ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে জানুয়ারি মাসে সাতজন, ফেব্রুয়ারিতে ছয়জন, মার্চে তিনজন, এপ্রিলে ১৪, মে মাসে পাঁচজন, জুনে ২৭, জুলাইয়ে ১২, আগস্টে ৬৪ এবং সেপ্টেম্বর মাসে ৩৬ জন ভর্তি হয়েছেন। অর্থাৎ বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত এদের শিকারের ঘটনা বেড়েই চলছে, যা রীতিমতো উদ্বেগজনক।অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে খোদ পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হলেও তারা জামিনে বের হয়ে আসে। এরপরই তারা আবার পুরোনো পেশায় ফিরে যায়। এ কারণে তাদের দৌরাত্ম্য বন্ধে কঠোর আইন হওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।

আমরা বলতে চাই, কেবল কঠোর আইন নয়, অপরাধী দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো সক্রিয় হতে হবে। এর পাশাপাশি অজ্ঞান পার্টির বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে রাজধানীর বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে নজরদারি আরো বাড়াতে হবে।